কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা ২০২৫ ও কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে আজকের পোস্টটা আপনার
জন্য। কারণ কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কি কি যোগ্যতা রয়েছে সে সম্পর্কে
আপনারা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলের
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
আপনি যদি কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য যেতে চান তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে চিন্তা করে
স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে হবে। কারণ আপনার আর্থিক সক্ষমতা না থাকলে আপনি কখনোই
কানাডা যেতে পারবেন না। তাই কানাডায় যাওয়ার জন্য আপনি যোগ্য কিনা সেদিকে খেয়াল
রাখতে হবে। তো চলুন দেরি না করে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা কি তা জেনে নেই।
উপস্থাপনা
কানাডা একটি অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ এদেশে বসবাস করা অনেক নিরাপদ। শুধু তাই নয়
কানাডায় শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত এদেশে স্টুডেন্টের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা এবং
নিরাপত্তা রয়েছে। এদেশে শিক্ষাব্যবস্থা পুরো বিশ্বের শিক্ষাঙ্গনে একটা আলোড়ন
সৃষ্টি করেছে। যার ফলে বিভিন্ন দেশের নাগরিক স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কানাডায় পাড়ি
জমাচ্ছে।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কানাডায় শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করার পরে তাদের
পছন্দমতে যেকোনো চাকরির সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। যেটি অন্য কোন দেশে শিক্ষা
ব্যবস্থার শেষ করার পরে চাকরি সুযোগ পাওয়া যায় না। তাই আজকে আমরা আমাদের
আর্টিকেলের মাধ্যমে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা পাওয়ার উপায় কি এ বিষয়গুলো
নিয়ে আলোচনা করব, বিস্তারিত জানতে নিচে পড়তে থাকুন।
আপনি কেন কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাবেন
আপনি কেন কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যাবেন এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। তাই
এর আসল কারণটা জানা সবার জরুরী। কানাডা এমন একটি দেশ যেখানে অর্থনৈতিক দিক থেকে
অনেক শক্তিশালী। সেখানকার জীবনযাত্রার মান অনেক বৈচিত্র্যময়। শুধু তাই নয়
কানাডায় পড়াশোনা করার জন্য একটি আকর্ষণীয় দেশ।
অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকার পাশাপাশি কানাডা পড়াশোনা করার জন্য স্বপ্নের দেশ বলা
হয়। এদেশে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা এবং সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কানাডায় পড়াশোনা
করার জন্য যে দেশের স্টুডেন্টরা সবচেয়ে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করে তাদের নামের
তালিকা গুলো প্রকাশ করা হলঃ-
- বাংলাদেশ
- ভারত
- চীন
- ইন্দোনেশিয়া
- নাইজেরিয়া ইত্যাদি
এ দেশগুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু দেশ রয়েছে যেখানকার স্টুডেন্ট পড়াশোনা করার জন্য
কানাডায় যেতে চায়। বর্তমানে আমেরিকার বিভিন্ন সমস্যার কারণে কানাডায় পড়াশোনা
করার জন্য মানুষের আগ্রহ বেশি দেখা যায়।
কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার
আপনি যদি কানাডা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে চান তাহলে অবশ্যই কানাডা
বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটারের অনুমতি পেতে হবে। এর জন্য প্রাথমিকভাবে আপনি যে
বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করেন সেই পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর সেই
বিশ্ববিদ্যালয় যদি আপনাকে যোগ্য মনে করে। তাহলে আপনি খুব সহজে তাদের ওয়েবসাইট
থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করতে পারবেন।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা
স্টাডি পারমিট ভিসাকে বলা হয় স্টুডেন্ট ভিসা। আর এই ভিসা মূলত আপনার শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের কোর্সের উপর নির্ভর করে। আপনার পড়া সোনার মেয়াদ যদি ৪ বছর হয়
তাহলে আপনার ভিসার মেয়াদ হবে ৪ বছর। তবে আপনি ৯০ দিনের অতিরিক্ত সময় পাবেন।
কিন্তু আপনার পড়াশোনার মেয়াদ যদি ছয় মাসের জন্য হয় তাহলে আপনি কোন ধরনের ভিসা
পাবেন না।
তবে আপনার যদি কোন আত্মীয়-স্বজন অথবা পরিবার কানাডায় থাকে তাহলে স্টুডেন্ট ভিসা
নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। আর যদি না থাকে তাহলে অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা
থাকতে হবে। নিচে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা কি তা উল্লেখ করা হলঃ-
- কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা কি সে শর্তগুলো উল্লেখ করা হল:
- প্রাথমিকভাবে কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার লাগবে।
- আপনি কানাডায় পড়াশোনা করবেন এজন্য আর্থিক সক্ষমতা আছে কিনা তার প্রমাণ লাগবে।
- আপনার অবশ্যই ভাষার দক্ষ থাকতে হবে যেমন: ইংরেজি ভাষা এবং ফরাসি ভাষা।
- IELTS স্কোর থাকতে হবে সর্বনিম্ন ৬.৫ পয়েন্ট।
- আপনার একাডেমী সকল সার্টিফিকেটের সনদপত্র লাগবে।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- আপনার পাসপোর্ট এর মেয়াদ সর্বনিম্ন ৬ মাসের হতে হবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি লাগবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, অনলাইন জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
- আপনার ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
- আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- আপনার পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড লাগবে।
- আপনার সম্পত্তির নথিপত্র লাগবে।
- আপনার শরীর ফিট আছে কিনা তার মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- আপনার কোন আইনি মামলা না থাকলে পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট লাগবে।
এ সকল ডকুমেন্ট অথবা কাগজপত্র সঠিক হলে আপনি ভিসা পাওয়ার যোগ্য।
ব্যাংক স্টেটমেন্টে যে সকল তথ্য দেখানো হয়
ব্যাংক স্টেটমেন্টে যে সকল তথ্য দেখানো হয় নিচে তা উল্লেখ করা হলঃ-
- আপনার টিউশনি ফি
- আপনার টাকা ইনকামের উৎস
- আপনার বাসস্থানের খরচ কত
- আপনার বীমা, খাবার, যাতায়াত এবং অন্যান্য খরচ সম্পর্কে।
এই সকল তথ্য ব্যাংকের স্টেটমেন্ট এ থাকলে বোঝা যাবে যে, আপনার আর্থিকভাবে সক্ষমতা
রয়েছে।
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যে সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসায় যে সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে নিচে তা উল্লেখ করা হলঃ-
কানাডায় সুবিধাসমূহঃ-
- উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।
- এখানকার ডিগ্রিগুলো বিশ্বের কাছে স্বয়ং সম্পূর্ণ।
- এখানে আর্থিক সহায়তা এবং স্কলারশিপের সুবিধা রয়েছে।
- পড়াশোনা শেষে জবের সুবিধা রয়েছে।
- পড়াশোনা শেষে কানাডায় স্থানীয়ভাবে বসবাসের সুযোগ রয়েছে।
- কানাডায় বসবাসের জন্য একদম নিরাপদ।
কানাডায় অসুবিধাসমূহঃ-
- উন্নতমানের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য খরচটা বেশি হতে পারে।
- কানাডায় আবহাওয়া অনেকটা ঠাণ্ডা যা অনেকের জন্য চ্যালেঞ্জ।
- কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার প্রসেসিং একটু জটিলতা রয়েছে।
- পার্ট টাইম জবের জন্য নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধ রয়েছে।
- মেডিকেল ইনস্যুরেন্সের খরচ অনেকের কাছে বাড়তি খরচ মনে হতে পারে।
কানাডায় জবের সুবিধা
কানাডায় পড়াশোনা করার পাশাপাশি জবের সুবিধা রয়েছে। তবে এই জবের সীমাবদ্ধ ২০
ঘন্টা কিন্তু মে থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত এ সময় জবের সীমাবদ্ধতা থাকে না।
কানাডায় যে সকল জবগুলো করা হয় যথাঃ-
- টিউশনি
- পণ্য বিক্রয় কর্মী
- ফুড ডেলিভারি ম্যান
- কম্পিউটার অপারেটর
- গবেষণা সহকারী কর্মী
এছাড়া কানাডা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষে ৩ বছরে চাকরির সুযোগ রয়েছে।
গ্রাজুয়েশনের শেষে চাকরির সুবিধা
কানাডায় পড়াশোনা করার শেষে চাকরির সুযোগ সুবিধা রয়েছে। কোন শিক্ষার্থীদের যদি
দক্ষতা এবং কাজের অভিজ্ঞতা থাকে অথবা পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে কানাডায়
অনেক ভালো চাকরির সুযোগ পাওয়া যায়। পরীক্ষার ফলাফলের উপর নির্ভর করে
আন্তর্জাতিকভাবে যে সকল চাকরি পাওয়ার সুযোগ সুবিধা রয়েছে নিচে তা উল্লেখ করা
হলঃ-
- একাউন্টিং ম্যানেজার
- প্রকৌশলী
- মানব সম্পদ অধিদপ্তর
- আইটি ডিপার্টমেন্ট ইত্যাদি
এ সকল চাকরির বাহিরেও অনেক চাকরির সুবিধা রয়েছে, অন্য পোস্ট পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা খরচ কত
যারা কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে চায় তাদের অনেকেই জানতে চায় স্টুডেন্ট
ভিসা খরচ কত। আজকে আমরা আপনাদের সুবিধার্থে আমাদের আর্টিকেলের মধ্যে ভিসা খরচ
নিয়ে আলোচনা করব। তো চলুন দেরি না করে আলোচনার মূল পর্বে চলে যাই। আপনি যদি
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার ভিসা খরচ হতে পারে ১০০
থেকে ১৫০ কানাডা ডলার।
এরপরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং ছবি তোলা সহকারে মোট খরচ বাংলাদেশি টাকায় ১৫ থেকে ১৭
হাজার টাকার মত লাগতে পারে।
কানাডায় কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন
কানাডায় কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে পারবেন সেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর
নামের তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলঃ-
- ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
- আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়
- এমসি মাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়
- রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়
- মাউন্ট এলিসন বিশ্ববিদ্যালয়
- রয়েল রোডস বিশ্ববিদ্যালয়
- প্রিন্স এডওয়ার্ড আইসল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়
- ওয়াটারলো বিশ্ববিদ্যালয়
- সিমন ফ্রেশার বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি
এ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার অনুমতির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য কত সময় লাগে
কানাডা ভিসা আবেদন করার পরে যদি আপনার কাগজপত্র এবং ডকুমেন্ট সঠিক থাকে তাহলে ১
থেকে ৩ মাসের মধ্যে ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন। তবে কোনো কারণে যদি ভিসা পেতে দেরি
হয় তাহলে নির্দিষ্ট এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে অথবা ভিসা অফিসে যোগাযোগ
করতে হবে।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার জন্য কত বয়স হতে হবে
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার জন্য কত বয়স হতে হবে এটা জানতে অনেকেই আগ্রহী।
তাই আজকে আমরা এর সঠিক তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। বর্তমান কানাডা
ভিসা পাওয়ার জন্য সর্বনিম্ন ১৬ থেকে ২১ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে আপনার যদি কোন
পরিবার অথবা আত্মীয়-স্বজন কানাডায় থাকে। তাহলে আপনার স্টুডেন্ট ভিসা আবেদন করার
প্রয়োজন নেই।
সাধারণ জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
কানাডায় স্টুডেন্ট ভিসা হতে সর্বোচ্চ কত সময় লাগে?
উত্তরঃ ১০ থেকে ১৩ সপ্তাহ।
কানাডায় স্টাডি পারমিট পেতে কতদিন লাগে?
উত্তরঃ এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত।
কানাডায় পড়তে গেলে কি স্টুডেন্ট ভিসা লাগবে?
উত্তরঃ ফ্যামিলি থাকলে প্রয়োজন নেই, না থাকলে প্রয়োজন।
কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া কি কঠিন?
উত্তরঃ একটু কঠিন, কিন্তু ডকুমেন্ট সঠিক থাকলে খুব দ্রুত পেয়ে যাবেন।
লেখক এর শেষ কথা - কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা সম্পর্কে
সম্মানিত পাঠক গন উপরের আলোচনা শেষে আপনারা ইতিমধ্যে কানাডা স্টুডেন্ট ভিসা
যোগ্যতা, কানাডা স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কত, কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটার সহ
আরো অনেক বিষয় জানতে পারলেন। আজকে আমরা আমাদের আলোচনায় সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা
করেছি। যাতে করে আপনারা খুব সহজে স্টুডেন্ট ভিসা সম্পর্কে জানতে পারেন।
আমরা এটাও আশাবাদী যে, আমাদের আর্টিকেলটি আপনাদের তথ্যবহুল এবং অনেক উপকারে আসবে।
তাই আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই লাইক কমেন্ট
শেয়ার করতে ভুলবেন না।
স্টার বিডি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url