বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়-জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় এবং জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা কি
জানতে হলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। কারণ আমরা
আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে জার্মানি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য
আপনার সামনে উপস্থাপন করব।
প্রিয় পাঠক গন জার্মানি যাওয়া অনেকের কাছে স্বপ্নের মত কারণ জার্মানি অর্থনৈতিক
শক্তিশালী একটি দেশ। জার্মানি উন্নত জীবন যাপন এবং বসবাসের জন্য আরামদায়ক একটি
দেশ। জার্মানিতে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন কর্মী কাজের উদ্দেশ্যে অথবা পড়াশোনা করার
জন্য আসে। তাই সময় নষ্ট না করে চলুন জার্মানি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
ভূমিকা
ইউরোপের যতগুলো দেশ রয়েছে তার মধ্যে জার্মানি পঞ্চম স্থান এবং নিরাপদ ও জনপ্রিয়
দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। জার্মানিতে কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে
অর্থনৈতিক অবকাঠামো, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা ও চাকরির ব্যাপারে অন্যান্য দেশে
তুলনায় সুযোগ সুবিধা বেশি থাকার কারণে এদেশে আশা যেকোনো নাগরিকের জন্য স্বপ্নের
মত। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে জার্মানি
যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে হবে। তাই সময় নষ্ট না করে চলুন জার্মানি যাওয়ার
উপায় সম্পর্কে জেনে নেই।
জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা
বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ব্যাচেলার মাস্টার্স, ডক্টরেট সকল ধরনের উচ্চ শিক্ষার
জন্য জার্মানিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনার উদ্দেশ্যে আসে। আর এ সকল শিক্ষা
অর্জনের জন্য জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা প্রয়োজন। তাই আজকে আমরা
জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা কি নিচে সে সম্পর্কে কিছু তথ্য উল্লেখ
করবঃ- এখানে ক্লিক করুন
- ব্যাচেলার ডিগ্রি অর্জনের জন্য আপনার SSC অথবা HSC তে সর্বনিম্ন 3.5 প্রয়োজন।
- মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জনের জন্য আপনার সর্বনিম্ন 3 প্রয়োজন।
- জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার জন্য IELTS এর সর্বনিম্ন স্কোর 6.5 থেকে 7 প্রয়োজন।
- জার্মানিতে পড়াশোনা করার জন্য জার্মানি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির নিয়োগ পত্র প্রয়োজন।
- জার্মানি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনের মূল কপি প্রয়োজন।
- আপনার বৈধ পাসপোর্ট প্রয়োজন।
- ভাষার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
- হেলথ ইনস্যুরেন্স থাকা প্রয়োজন।
- একাডেমিক সার্টিফিকেট থাকা প্রয়োজন।
- ভোটার আইডি কার্ড থাকা প্রয়োজন।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট থাকা প্রয়োজন।
- আপনার আর্থিক স্বচ্ছলতা আছে কিনা তার প্রমাণ প্রয়োজন।
- আপনার প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক্সেপশন লেটার প্রয়োজন।
এ সকল ডকুমেন্ট থাকলে আপনারা খুব সহজে জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা পেয়ে
যাবেন।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
যারা বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে চায় তারা অবশ্যই
আমাদের আর্টিকেল মনোযোগ দিয়ে পড়বেন। পূর্বে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়া অনেক
কষ্ট হতো কিন্তু বর্তমান বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় অনেক সহজ। তাই
আজকে আমরা বাংলাদেশে থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব। বর্তমান
কয়েকটি উপায়ে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা পাওয়া যায় যথাঃ-
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- ফ্যামিলি ভিসা
- চাকরির ভিসা
এ সকল ভিসার মাধ্যমে আপনারা বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে পারবেন। এজন্য আপনাকে
অবশ্যই জার্মানির দ্রুতবাস গিয়ে আপনার প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিতে হবে। নিচে
সে সকল ডকুমেন্ট উল্লেখ করা হলঃ-
- আপনার ৬ মাসের বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে।
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
- আপনার পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকতে হবে।
- আপনার ব্যাংকের স্টেটমেন্ট থাকতে হবে।
- আপনার মেডিকেল সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
- চেয়ারম্যানের সনদপত্র থাকতে হবে।
এ সকল ডকুমেন্ট জার্মানি দ্রুতবাসে গিয়ে জমা দিতে হবে এবং আপনি কোন ধরনের ভিসা
চান সেই ভিসা সম্পর্কে জানাতে হবে। সকল ডকুমেন্ট জমা দেওয়া হয়ে গেলে কিছু দিনের
মধ্যে আপনার কাঙ্ক্ষিত ভিসা আপনার কাছে পৌঁছে যাবে। তবে আপনারা চাইলে বাংলাদেশ
এজেন্সির মাধ্যমে জার্মানির যে কোন ভিসা আবেদন করতে পারেন।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি স্টুডেন্ট ভিসা কত টাকা লাগে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ
প্রশ্ন। যারা জার্মানিতে পড়াশোনা করতে চায় তাদের অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসা কত টাকা
লাগে এ সকল বিষয় জানতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা পেতে ৫ থেকে ৭
লক্ষ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু স্টুডেন্ট ভিসা পেতে আপনার ব্লক একাউন্টে ১১,৯০৪ ইউরো
থাকা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে
যারা নতুন অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে চায় তারা অবশ্যই আমাদের
আর্টিকেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে জেনে
নিবেন। তাই আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ওয়ার্ক
পারমিট ভিসা পেতে কত টাকা লাগে সে সম্পর্কে আলোচনা করব। বর্তমান বাংলাদেশ থেকে
জার্মানি যেতে ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে। এবং জার্মানি বসবাস অবস্থায়
বাড়তি ৩০০ থেকে ৪০০ ইউরো খরচ হতে পারে। শুধু তাই নয় বসবাসের জন্য ৪০০ ইউরো খরচ
হতে পারে। তাই আপনারা চাইলে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভাষা শিখে জার্মানি যেতে
পারেন।
বাংলাদেশ টু জার্মানি বিমান ভাড়া কত
আপনি যদি জার্মানি যাওয়ার জন্য প্রিপারেশন নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ টু
জার্মানি বিমান ভাড়া কত তা জানতে হবে। তাই আজকে আমরা ইকোনমিক এবং বিজনেস ক্লাসের
সিটের ভাড়া সম্পর্কে আলোচনা করব।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকোনমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 1,57,490 থেকে 2,43,842 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,22,864 থেকে 4,02,236 টাকা পর্যন্ত।
সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকনোমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 1,09,739 থেকে 1,62,384 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,14,598 থেকে 5,08,466 টাকা পর্যন্ত।
চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকোনমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 1,29,280 থেকে 1,67,337 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,09,868 থেকে 5,20,236 টাকা পর্যন্ত।
মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকোনমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 1,32,495 থেকে 2,07,637 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,08,560 থেকে 4,11,640 টাকা পর্যন্ত।
শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্স বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকনোমিক ক্লাসের ছিটের ভাড়া 1,47,043 টাকা।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া হয় না।
এয়ার ইন্ডিয়া এয়ারলাইন্স বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকোনমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 94,700 থেকে 1,08,693 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া হয় না।
কাতার এয়ারওয়েজ বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকনোমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 98,692 থেকে 1,34,562 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,07,513 থেকে 4,15,651 টাকা পর্যন্ত।
থাই এয়ারওয়েজ বিমানের ভাড়া সম্পর্কেঃ-
- ইকোনমিক ক্লাসের সিটের ভাড়া 1,19,861 থেকে 1,73,693 টাকা পর্যন্ত।
- বিজনেস ক্লাসের সিটের ভাড়া 3,76,190 থেকে 4,01,539 টাকা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে
আপনি যদি বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে চান তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ থেকে জার্মানি
ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে তা জানতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশ থেকে জার্মানি ভিসা
পেতে ২৫ থেকে ৩০ দিন সময় লাগে।
জার্মানি কোন কাজের চাহিদা বেশি
জার্মানি যাওয়ার আগে অবশ্যই জার্মানি কোন কাজের চাহিদা বেশি তা জানতে হবে। তবে
আপনাদের একটা বিষয় জেনে রাখা ভালো জার্মানিতে সব কাজের চাহিদা বেশি। এদের
মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ রয়েছে যেমনঃ-
- ইলেকট্রিশিয়ান জাতীয় কাজ।
- মেকানিক্যাল জাতীয় কাজ।
- আইটি ডিপার্টমেন্ট জাতীয় কাজ।
- ফুড ডেলিভারি জাতীয় কাজ।
- ড্রাইভিং জাতীয় কাজ।
- হোটেল রেস্টুরেন্ট জাতীয় কাজ।
- শপিংমল জাতীয় কাজ।
- বিক্রয় কর্মী জাতীয় কাজ।
- ক্লিনার জাতীয় কাজ।
- নিরাপত্তা কর্মী জাতীয় কাজ।
এ সকল কাজগুলো জার্মানিতে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
জার্মান দেশের আয়তন কত বর্গকিলোমিটার
জার্মান দেশে যাওয়ার আগে অবশ্যই জার্মান দেশের আয়তন কত বর্গকিলোমিটার জেনে
রাখা ভালো। তাই আজকে আমরা জার্মান দেশের ভৌগোলিক আয়তন সম্পর্ক আলোচনা করব।
জার্মান দেশ ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহল একটি দেশ। নিচের এ দেশের আয়তন
সম্পর্কে আলোচনা করা হলঃ-
- জার্মান দেশের বর্তমান আয়তন ৩,৫৭,২১ বর্গ কিলোমিটার।
- জার্মান দেশের ভূমির আয়তন ৩,৪৯,২২৩ বর্গ কিলোমিটার।
- জার্মান দেশের জল ভাগের আয়তন ৭,৭৯৮ বর্গ কিলোমিটার।
- জার্মান দেশ ইউরোপের মধ্যে আয়তনের দিক থেকে সপ্তম স্থানে রয়েছে।
- জার্মান দেশ বিশ্বের মধ্যে আয়তনের দিক থেকে ৬৩তম স্থান রয়েছে।
জার্মান দেশের জনসংখ্যা কত
সম্মানিত পাঠকগন আপনারা ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়
সম্পর্কে জেনেছেন। তাই এখন আমরা জার্মান দেশের জনসংখ্যা কত তা জানবো। বর্তমান
জার্মান দেশের জনসংখ্যা ৮৫ মিলিয়ন।
বাংলাদেশ থেকে জার্মান কত কিলোমিটার
আমরা এতক্ষণ বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এখন
আমরা বাংলাদেশ থেকে জার্মান কত কিলোমিটার তা নিয়ে আলোচনা করব।
বর্তমান বাংলাদেশ থেকে জার্মান ৭,২৮৭ কিলোমিটার।
FAQ'S
জার্মানি ভিসা পেতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ দিন।
জার্মানি মুদ্রার নাম কি?
উত্তরঃ জার্মানি মুদ্রার নাম হল ইউরো কয়েন।
জার্মানিতে কোন কাজের অভাব আছে?
উত্তরঃ আইটি, স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৌশলী, ব্যবসা ইত্যাদি।
জার্মানিতে ঘন্টায় বেতন কত?
উত্তরঃ ২২,৬৫ ইউরোর মত।
জার্মানির শহরের নাম কি?
উত্তরঃ বার্লিন।
জার্মান ভাষা শিখতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ ২৫ থেকে ৩০ হাজারের মত।
জার্মানির বৃহত্তম ধর্ম কোনটি?
উত্তরঃ খ্রিষ্টানধর্ম।
লেখকের শেষ মন্তব্য
সম্মানিত পাঠক গন আপনারা ইতিমধ্যে উপযুক্ত আলোচনা থেকে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি
যাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি
আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আমরা সব সময় চেষ্টা করি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের
কাছে পৌঁছে দিতে। এজন্য আমাদের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে
অবশ্যই লাইক কমেন্ট শেয়ার করে দিয়ে সহায়তা করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url