অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা 2024-ভিসা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানুন।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন কিভাবে করতে হয় এ বিষয়টা জানতে চান তাহলে আজকের
পোস্টটা আপনাদের জন্যই কারণ আমরাই আপনাদের অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সকল প্রসেস
সম্পর্কে ধারণা দিব। তবে বিষয়গুলো জানতে হলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলের শুরু থেকে
শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।
প্রিয় পাঠক গন বর্তমানে অধিকাংশ মানুষই তাদের কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়া যায়।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে ভিসা প্রসেসিং এর বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। সে
সম্পর্কে অনেকেই জানে না তাই আজকে আমরা কাজের ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে আলোচনা করব।
ভূমিকা
বর্তমান অধিকাংশ মানুষই চেষ্টা করে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা পাওয়ার পরে সেখানে
গিয়ে কাজ করবে। এর কারণ হল অস্ট্রেলিয়ার জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত শুধু তাই
নয় অস্ট্রেলিয়ার মনোরম পরিবেশ এবং কর্মসংস্থানের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে
বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া কাজের
ভিসা পাওয়ার জন্য অবশ্যই কিছু নিয়মকানুন এবং কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে। তাই
আজকে আমরা অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম জানুন
প্রতিবছর অস্ট্রেলিয়া সরকার বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের জন্য ভিসা অফার করে থাকে।
এজন্য অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার জন্য কিছু যোগ্যতা এবং কিছু ডকুমেন্ট
জমা দিতে হয়। তবে আপনার যদি ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়স হয়ে থাকে তাহলে আপনি
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবেন। তাই যারা অস্ট্রেলিয়া
যেতে চান তারা অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করার নিয়ম জেনে নিন। তবে কাজের
ভিসা আবেদন করার জন্য যে সকল কাগজপত্র, যোগ্যতা এবং ডকুমেন্ট লাগে সে সম্পর্কে
নিচে আলোচনা করা হলঃ
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদনের জন্য কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হয়
- ই-পাসপোর্ট জমা দিতে হবে।
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- বর্তমানে তোলা পাসপোর্ট ছবি জমা দিতে হবে।
- আইএলটিএস সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- শিক্ষকতার যোগ্যতার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- চাকরির সিভি থাকলে জমা দিতে হবে।
- কোম্পানির অফার লেটার থাকলে জমা দিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে জমা দিতে হবে।
- আর্থিক সচলতার প্রমাণ জমা দিতে হবে যেমন : ব্যাংক স্টেটমেন্ট।
- কাজের স্ক্রিন সার্টিফিকেট থাকলে জমাতে হবে।
- কাজের দক্ষতার প্রমাণ জমা দিতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদনের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে
- মেয়াদ শেষ হওয়ার অন্তত ২৪ মাস আগে ই-পাসপোর্ট এর ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।
- সর্বশেষ তিন মাস আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে।
- সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড পাসপোর্ট ছবি জমা দিতে হবে।
- ৫.৫ ন্যূনতম আইএলটিএস স্কোর থাকলে জমা দিতে হবে
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ইংরেজিতে সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে।
- জাতীয় পরিচয় পত্র ইংরেজিতে সত্যায়িত করে জমা দিতে হবে।
- কোম্পানির অফার লেটার থাকলে মূল কবি জমা দিতে হবে।
- ইংরেজিতে চাকরির সিভি থাকলে জমা দিতে হবে।
- সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংকের স্টেটমেন্ট থাকলে জমা দিতে হবে।
- কাজের স্কিল সার্টিফিকেট থাকলে জমা দিতে পারেন।
- কাজে দক্ষতার প্রমাণ থাকলে সত্যায়িত করে ইংরেজিতে জমা দিতে হবে।
প্রিয় পাঠক গন অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদনের জন্য উপরে সবগুলো ডকুমেন্ট জমা
দিতে হবে তবে যদি প্রয়োজনীয় কোন ডকুমেন্ট আরো দরকার পরে সেগুলো জমা দিতে।
অস্ট্রেলিয়ার ভেরিফাই ওয়েবসাইটে আবেদন করার নিয়ম
বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে কাজের ভিসা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করে থাকে।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ভেরিফাই ওয়েবসাইটে আবেদন করার নিয়ম জানে না। তো চলুন সময়
নষ্ট না করে অস্ট্রেলিয়ার ভেরিফাই ওয়েবসাইটে আবেদন করার নিয়ম জেনে নেইঃ
- প্রাথমিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার ভেরিফাই সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের নামে একটা একাউন্ট তৈরি করতে হবে।
- অ্যাকাউন্ট তৈরি করা হয়ে গেলে আপনার পছন্দমত ভিসা সিলেক্ট করতে হবে।
- ভিসা আবেদন করার আগে থেকে ফরম সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
- আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দেওয়া হয়ে গেলে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে ভিসা আবেদন ফ্রি জমা দিতে হবে।
- সকল কার্যক্রম শেষ হলে ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ভিসা প্রসেসিং শুরু হয়ে যাবে।
উপরের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে আপনাকে অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে। যদি সকল
কার্যক্রম শেষ হয়ে যায় তাহলে ভিসা আপনাকে হস্তান্তর করা হবে। এখানে ক্লিক করুন
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ কেমন
অস্ট্রেলিয়া সরকার যেহেতু প্রতিবছর কাজের জন্য ভিসা আবেদনের সুযোগ দিয়ে থাকে।
যার ফলে অসংখ্য মানুষ অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করে। কিন্তু
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ কেমন এ বিষয়টা অনেকে জানে না তাই আজকে আমরা এই
বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব যেমনঃ
- আপনি যদি সরকারি ভাবে কাজের ভিসা নিতে চান তাহলে আপনার খরচ কম লাগবে।
- আপনি যদি বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা নিতে চান তাহলে খরচ একটু বেশি হবে।
- দালালের মাধ্যমে ভিসা নিতে গেলে ঝুঁকি বেশি থাকে।
- বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ ১০ থেকে ১৭ লাখ টাকা প্রায়।
প্রিয় পাঠক গন অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা খরচ ১০-১৭ লাখ টাকার বেশি লাগতে পারে
আবার কম লাগতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসার বেতন কেমন
যারা অস্ট্রেলিয়ায় কাজের জন্য যেতে চায় তার বেশিরভাগ মানুষই অস্ট্রেলিয়া কাজের
ভিসা বেতন কেমন বিষয়গুলো জানতে চায়। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক অস্ট্রেলিয়া
কাজের ভিসার বেতন কেমন। অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন কাজের বিভিন্ন বেতন রয়েছে তবে
যারা দক্ষ শ্রমিক তাদের বেতন একটু বেশি। তাই অস্ট্রেলিয়ায় শ্রমিকরা কি ধরনের কাজ
করে সেগুলো নিচে তালিকা ভুক্ত করা হলঃ
- কৃষিকাজ করে থাকে
- বাগান শ্রমিকের কাজ
- কনস্ট্রাকশনের কাজ
- গাড়ি ড্রাইভিং এর কাজ
- পাইপ ফিটিংয়ের কাজ
- ডেলিভারি ম্যান এর কাজ
- ইলেকট্রিশিয়ানের কাজ ইত্যাদি।
বর্তমানে অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়া অন্যতম তাই এই দেশে
প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের শ্রমজীবী মানুষ এসে কাজ করার সুযোগ পায়। তবে
অস্ট্রেলিয়ায় কাজে দক্ষতা ও যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তাদের বেতন একটু
বেশি যেমন একজন দক্ষ শ্রমিকের বেতন ৩ থেকে ৫ লাখ টাকার মত হয়ে থাকে তবে এটি
আনুমানিক। তবে আপনারা চাইলে অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে গিয়ে এ সকল তথ্য
পেতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়া ক্লিনার ভিসা খরচ কেমন
যাদের এডুকেশন কোয়ালিফিকেশন নেই তার বেশিরভাগ মানুষই অস্ট্রেলিয়া ক্লিনার ভিসা
আবেদন করে থাকে। অস্ট্রেলিয়া ক্লিনার ভিসা পাওয়া অনেকটাই সহজ তবে ক্লিনার
ভিসায় যে সকল কাজ করতে হয় যেমনঃ
- আউটডোর ক্লিন
- ইনডোর ক্লিন
- অফিস ক্লিন
- কোম্পানি ক্লিন
- আদালত ক্লিন
- রাস্তাঘাট ক্লিন ইত্যাদি।
এ সকল অফিসের ভিতরে এবং বাহিরে ক্লিনার হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তবে এ সকল
কাজের বেতন অনেকটাই বেশি যেমন ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করা হয়ে থাকে। শুধু তাই
নয় ক্লিনার ভিসা পেতে ৮ থেকে ১২ লাখ টাকার মত খরচ হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসার খরচ কত
বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ উচ্চ জীবনযাত্রা মান উন্নত করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার মত
শক্তিশালী অর্থনীতি দেশে পাড়ি জমায়।
তবে যারা নতুন ভাবে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করে তার বেশিরভাগ মানুষই অস্ট্রেলিয়া
ওয়ার্ক ভিসা খরচ কত জানতে চায়। তাই কথা না বাড়িয়ে ওয়ার্ক ভিসার খরচ কত যেনে
নেওয়া যাক বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক কাজের ভিসা খরচ আনুমানিক ৮-১০ লাখ টাকার
মত প্রায়।
অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ছুটির ভিসার জন্য আবেদন করা যায়
যে সকল শ্রমজীবি মানুষ অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত অবস্থায় রয়েছে তার অধিকাংশ মানুষই
জানতে চায় অস্ট্রেলিয়া কাজের ছুটির ভিসার জন্য আবেদন করা যায় কি না। কারণ এটি
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন আপনি যদি অস্ট্রেলিয়া থেকে হলিডে ছুটির জন্য আবেদন
করতে চান তাহলে হলিডে ভিসা আবেদন করতে হবে। তাই আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্যগুলো
অস্ট্রেলিয়ার ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে জমা দিতে হবে। যদি সকল ডকুমেন্ট ঠিক থাকে
তাহলে আপনি কাজের ছুটি পেতেও পারেন।
শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক গন উপযুক্ত আলোচনা থেকে ইতিমধ্যেই অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা সম্পর্কে
জানতে পেরেছেন। প্রত্যেকটা মানুষই চায় তার জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে তাই
প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমায়। আপনি যদি নতুন
অবস্থায় অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে
অস্ট্রেলিয়ার সরকারি ভেরিফাই ওয়েবসাইটে সকল ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে এবং সকল
কাগজপত্র ঠিক থাকলে ৬-৮ মাসের মধ্যে ভিসা প্রসেসিং শুরু হয়ে যাবে। তাই
আর্টিকেলটি আশা করছি আপনাদের অবশ্যই কাজে লাগবে তবে আমাদের আর্টিকেলটি যদি
আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url