গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না এবং আনারস জাতীয় ফল খেলে কি গর্ভের নবজাতক শিশুর ক্ষতি হয় ইত্যাদি বিষয়গুলো গর্ভবতী মায়ের মনে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন সৃষ্টি হয়। যাদের মনে এই ধরনের প্রশ্ন রয়েছে আজকের পর থেকে আপনাদের আর চিন্তা করতে হবে না। কারণ আপনাদের যত প্রশ্ন রয়েছে সকল বিষয় নিয়ে আজকে আমরা আলোচনা করব।
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না
প্রিয় পাঠক গন গর্ভবতী মায়ের শারীরিক পুষ্টির জন্য যেমন বিভিন্ন ধরনের ফল খেতে হয় ঠিক তেমনি এদের মধ্যে আবার কিছু ক্ষতিকর ফল রয়েছে যা গর্ভাবস্থায় খাওয়া যাবে না। তাই যে সকল ফল খাওয়া যাবে না সেই ফল সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।

ভূমিকা

গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটা মায়ের স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের সুস্থ থাকার জন্য প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ গ্রাম ক্যালোরি প্রয়োজন হয়। আর এ সকল ক্যালরি বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি এবং ফল খাওয়া মাধ্যমে পাওয়া যায়। এ সকল ফল খাওয়ার ফলে শরীরের গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং গর্ভবতী মা ও নবজাতক শিশুর পুষ্টির উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন সি এবং ফলিক এসিড জাতীয় উপাদান রয়েছে। 

আর এই উপাদান গুলো গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর দুই জনেরই খুব প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় প্রত্যেকটা গর্ভবতী মায়ের ৭০ থেকে ৭৫ এমজি ভিটামিন সি এবং ০.৫ এমজি ফলিক এসিড প্রয়োজন। এর কারণ হলো ফলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার জাতীয় উপাদান থাকে যা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থেকে সমাধান করে থাকে। কিন্তু এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নয়। এই সকল ফল খেলে শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে। এখানে ক্লিক করুন

এবং শরীরের পুষ্টি জাতীয় উপাদান গুলো বের করে ফেলে। এজন্য এই সকল সমস্যা থেকে এড়িয়ে চলতে হলে সে সকল অনিরাপদ ফল সম্পর্কে ধারণা থাকা খুবই জরুরী। তাই গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না

গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শারীরিক পুস্টির জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল খাওয়া প্রয়োজন। কারণ গর্ভাবস্থায় প্রথম ১ থেকে ৩ মাসের এর মধ্যে পুষ্টিকর ফল খেতে হয় যার ফলে গর্ভের নবজাতক শিশুর শারীরিক গঠন ও সুস্থতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কিন্তু এই ফলের মধ্যে আবার কিছু ফল রয়েছে যেগুলো ক্ষতিকর সেগুলো খাওয়া যাবে না। আজকে আমরা সেই ধরনের ক্ষতিকর ফল সম্পর্কে আলোচনা করব। এজন্য অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকার পড়তে হবে। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে নিষিদ্ধ ফল সম্পর্কে জেনে নেই।

আনারস জাতীয় ফল

আনারসের পুষ্টিগণ সম্পর্কে সবাই জানেন কিন্তু আনারসের মধ্যে যেহেতু এন্টিঅক্সিডেন্ট নামক এক ধরনের উপাদান রয়েছে। যা গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়ার ফলে শরীরে ব্রোমেলিন নামক এক ধরনের এনজাইম তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই এনজাইম তৈরি ফলে গর্ভাবস্থায় শারীরিক প্রোটিন ভেঙে দেয়। যার কারণে গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মধ্যে যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা শুরু হতে পারে শুধু তাই নয় প্রস্রাবের যন্ত্রনা শুরু হতে পারে। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের ডিহাইড্রেশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আনারস খেতে হবে। তবে গর্ভাবস্থায় যেহেতু আনারস খাওয়া যাবে না সে ক্ষেত্রে এই আনারস জাতীয় ফল এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো।

পেঁপে জাতীয় ফল

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না এ সকল ফলের মধ্যে রয়েছে পেঁপে জাতীয় ফল। পেঁপের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন রয়েছে কিন্তু গর্ভাবস্থায় পেঁপে খাওয়া উচিত নয়। এর প্রধান কারণ হলো গর্ভাবস্থায় পেঁপে খেলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে পেঁপের মধ্যে ভিটামিন থাকা সত্ত্বেও পেটে ল্যাটেক্স উপাদান তৈরি হয়। যার কারণে গর্ভাবস্থায় প্রসাব হওয়ার অনেক আগে পেটে টান পড়ে যায়। যার ফলে গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় রক্তপাত এবং গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেহেতু পেঁপে খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় মারাত্মক ক্ষতি হওয়া সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য গর্ভাবস্থায় পেঁপে জাতীয় ফল না খাওয়া সবচেয়ে উত্তম।

খেজুর জাতীয় ফল

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না তারমধ্যে খেজুর অন্যতম। খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে অধিকাংশ মানুষই জেনে থাকবেন। খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। শুধু তাই নয় খেজুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর। এর কারণ হলো খেজুর জাতীয় ফল খাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় শারীরিক তাপমাত্রা অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়। 
গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন
যার কারণে গর্ভাবস্থায় জরায়ুতে অতিরিক্ত যন্ত্রণা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে আপনি চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন একটি করে খেজুর খেতে পারেন। তবে যেহেতু খেজুর খেলে গর্ভাবস্থায় নবজাতক শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সে ক্ষেত্রে খেজুর এড়িয়ে চলা উত্তম।

টমেটো জাতীয় ফল

টমেটো জাতীয় ফল অধিকাংশ মানুষই চিনে থাকবেন অধিকাংশ মানুষই দৈনন্দিন জীবনে টমেটো সালাদ হিসেবে খেয়ে থাকে। কিন্তু গর্ভাবস্থায় টমেটো খাওয়া ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যে সকল টমেটো ক্যানে ভরা থাকে যার মধ্যে প্রিজারভেটিভ উপাদান বেশি থাকে যা গর্ভাবস্থায় নবজাতক শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তাই আপনি চাইলে হাটে বাজারে বিভিন্ন সবজির দোকান থেকে টাটকা জাতীয় টমেটো কিনে নিয়ে আসতে পারেন। তবে টমেটো খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। যেহেতু টমেটো গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকারক সেক্ষেত্রে টমেটো জাতীয় ফল এড়িয়ে চলতে পারলে ভালো।

তরমুজ জাতীয় ফল

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না এ সকল প্রশ্ন অনেকেই আমাদের করে থাকে। তাই আজকের আর্টিকেল শুধুমাত্র তাদের জন্যই। গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল খাওয়া যাবে না এদের মধ্যে তরমুজ জাতীয় ফল অন্যতম। গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাংলাদেশ তরমুজের আমদানি সবচেয়ে বেশি। যার ফলে অধিকাংশ মানুষই তাদের তরমুজ ফল প্রিয় কিন্তু গর্ভাবস্থায় তরমুজ জাতীয় ফল অনেক ক্ষতিকর। এর প্রধান কারণ হলো তরমুজ পানি জাতীয় ফল খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক উৎপাদন টনিক শরীর থেকে বের করে দেয় যা গর্ভের নবজাতক শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো তরমুজ খেতে পারেন।

আঙ্গুর জাতীয় ফল

গর্ভাবস্থায় যে সকল ফল গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর এর মধ্যে একটি হলো আঙ্গুল জাতীয় ফল। অতিরিক্ত আঙ্গুর খেলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক তাপমাত্রা বেড়ে যায় যা গর্ভের শিশুর জন্য অতান্ত ক্ষতিকারক। 
আঙ্গুর জাতীয় ফল
তবে আঙ্গুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ পুষ্টিগুণ রয়েছে। এজন্য আপনি চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মতো খেতে পারেন। যেহেতু গর্ভাবস্থায় আঙ্গুর জাতীয় ফল ক্ষতিকারক সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ফল না খাওয়াটাই সর্বতম।

বরফের জমানো ফল

গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না এ সকল ফলের মধ্যে রয়েছে বরফের জমানো ফল। অধিকাংশ সময় গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েরা ফ্রিজে রেখে ফল খেয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে বরফে জমানো ফল স্বাদ এবং পুষ্টি দুটাই গুণগত মান কমে যায়। এজন্য সবসময় ডাক্তাররা টাটকা জাতীয় ফল খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকে। যেহেতু বরফের জমানো ফল খেলে গর্ভের নবজাতক শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই বরফের জমানো ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক গন উপরে আলোচনা থেকে আপনারা ইতিমধ্যে গর্ভাবস্থায় কি কি ফল খাওয়া যাবে না সে সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের শারীরিক পুষ্টির জন্য ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু যে সকল ফল গর্ভবতী মায়ের জন্য ক্ষতিকর সে সকল ফল খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। আশা করি আজকের পোস্টটা আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি করতে পেরেছি। আমাদের পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে। 


অবশ্যই লাইক কমেন্ট শেয়ার করে দিয়ে সহযোগিতা করবেন। শুধু তাই নয় যেহেতু আপনারা এত কষ্ট করে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন সেজন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। পরিশেষে আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। তবে আমাদের আর্টিকেলগুলো যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url