ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় কি কি বিস্তারিত জেনে নিন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় কি? চিনি ও লেবুর রস ফর্সা হওয়ার উপায় এ
সম্পর্কে সকল তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরব। প্রাচীনকাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কারণ ত্বকের
সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে কে না চায়। যারা ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হতে চায় তারা
আমাদের সঙ্গে থাকুন।
প্রিয় পাঠক গন ছেলেমেয়ে সবাই শরীরের রং ফর্সা এবং উজ্জ্বল হোক এই প্রত্যাশা
সবাই করে থাকে। কিন্তু কিভাবে প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়া যায় সে
সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে অনেকে হতাশ। তাই চিন্তা করার কারন নেই আমরা
আপনাদেরকে ফর্সা হওয়ার ঘরো পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দিব।
ভূমিকা
দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে আমাদের শরীরের ত্বক কালচে হয়ে যায়। কিন্তু
কিভাবে শরীরের এই সকল কালচে দাগ গুলো দূর করা যায় এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না
থাকার কারণে আমরা বেশিরভাগ সময় হতাশ হয়ে যাই। তাই আজকের পর থেকে হতাশ হওয়ার
দরকার নাই আমরা এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘরোয়া পদ্ধতি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
যেগুলো ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার শরীরের কালচে দাগ দূর হয়ে শরীরের ত্বক ফর্সা
ও লাবন্য ফিরে আসবে। প্রাচীনকাল যখন চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না মানুষ তখন থেকেই
প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায় বের করতো।
সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হল বর্তমানেও প্রাকৃতিকভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার
উপায় রয়েছে নিচে সেই সকল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় কি?
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় কি এ প্রশ্ন অধিকাংশ মানুষই আমাদের করে থাকে।
আজকে এ বিষয়গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরব। শুধু তাই নয় যারা ফর্সা হতে চায়
আজকের পোস্টটা শুধুমাত্র তাদের জন্যই। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে
হলে অবশ্যই আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক
ঘরোয়া ভাবে কোন কোন উপাদান ব্যবহার করে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়া যায়। নিচে এ
সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করা হলো।
চিনি ও লেবুর রস ফর্সা হওয়ার উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় হল চিনি ও লেবুর রস। আমরা দৈনন্দিন জীবনে
বিভিন্ন খাবারের সাথে লেবু ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু লেবুর উপকার সম্পর্কে
অনেকের অজানা। চিনি ও লেবুর রস ফর্সা হওয়ার উপায়। আপনি চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে
সামান্য পরিমাণ চিনি ও ১ থেকে ২ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে মুখের কালো দাগে হালকা করে
লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে ঠান্ডা
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মুখের ত্বক ফর্সা পেতে হলে অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে
কয়েকদিন ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করলে মুখের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা চলে আসবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডাবের পানির ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় ডাবের পানি। ঘরোয়া পদ্ধতিতে ডাবের পানি
ব্যবহার করে মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। আপনারা বেশিরভাগ সময় ডায়রিয়া,পানি
শূন্যতা, রক্ত পরিষ্কার করতে ডাবের পানি পান করে থাকেন। আপনি চাইলে খুব সহজে
প্রতিদিন দুইবার থেকে তিনবার ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ত্বকের ফর্সা ভাব ফিরে
আনতে পারেন। কারণ ডাবের পানি ব্যবহার করলে খুব তাড়াতাড়ি ত্বকের ফর্সা ভাব চলে
আসে। শুধু তাই নয় মুখের বিভিন্ন কালচে দাগগুলো দূর করতে সাহায্য করে। তাই এই
পদ্ধতিটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহার করে ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে পারেন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কলা ও দুধের ব্যবহার
কলা ও দুধ অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান আমরা দৈনন্দিন জীবনে দুধ এবং কলা ব্যবহার করে
থাকি। কারণ কলা ও দুধের মধ্যে প্রচুর ভিটামিন ও প্রোটিন রয়েছে। ঠিক তেমনি ত্বক
ফর্সা করতে কলা ও দুধের বিকল্প নেই। প্রাথমিকভাবে সামান্য পরিমাণ কলা ২ থেকে ৩
চামচ কাঁচা দুধ সংমিশ্রণ করে ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন। এরপর মুখের বিভিন্ন কালচে
স্থানে ফেসপ্যাকটি লাগিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
এরপরে পরিষ্কার ঠান্ডা পানিতে মুখ ধরে ফেলুন। এইভাবে কয়েক দিন
ধারাবাহিকভাবে এই ফেসপ্যাক ব্যবহারের ফলে ত্বকের সৌন্দর্য বা ফর্সা বর্ণ চলে
আসবে। আপনারা চাইলে ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই ফেস প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে হলুদের ব্যবহার
হলুদ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়। কারণ হলুদের মধ্যে
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি জাতীয় উপাদান রয়েছে। হলুদের
মধ্যে এই সকল উপাদান থাকার কারণে ত্বকের মধ্যে সব ধরনের জীবাণু দূর করতে সাহায্য
করে। তাই প্রথমে কাঁচা হলুদ বেটে গুড়া করতে হবে। এরপরে ২ থেকে ৩ চামচ লেবুর রস
একত্রে মিশিয়ে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপর
পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। আপনারা চাইলে কুসুম কুসুম গরম পানি
ব্যবহার করতে পারেন। এইভাবে কয়েকদিন হলুদের ব্যবহার করতে পারলে ত্বকের ফর্সা ভাব
চলে আসবে। এখানে ক্লিক করুন
ঘরোয়া পদ্ধতিতে দুধ ও মধুর ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতিতে দুধ ও মধুর ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা সম্ভব। কারণ
দুধ ও মধু অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান শুধু তাই নয় দুধ ও মধুর মধ্যে বিভিন্ন
প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে। যা ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে
সাহায্য করে। এজন্য প্রথমে ২ চামচ দুধ ও দের চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে
লাগিয়ে রাখুন। এরপরে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে
ফেলুন। এভাবে ১ থেকে ২ সপ্তাহ ব্যবহার করার ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও ফর্সা ভাব
বৃদ্ধি পাবে। এর কারণ হলো দুধের ভিতরে যে ধরনের উপাদান রয়েছে যা ত্বকের ভিতর
থেকে উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে টক দই ও মধুর ব্যবহার
টক দই ও মধু ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়। কারণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে টক দই ও
মধুর ব্যবহার করার মাধ্যমিক ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করা যায়। ত্বকের ফর্সা ভাব
বৃদ্ধি করতে হলে প্রথমে ২ থেকে ৩ চামচ টক দই ও দের চামচ মধু একসাথে ভালোভাবে
মিশিয়ে নিন। এরপরে মুখ পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন তারপর টক দই ও মধুর
মিশ্রিত পেস্ট মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২৫ মিনিট পরে ঠান্ডা
পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এরপর দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার ত্বকের ফর্সা ভাব
দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে অ্যালোভেরা ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতিতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়।
অ্যালোভেরা অধিকাংশ মানুষই চিনে থাকেন। বর্তমানে বিভিন্ন হাটে বাজারে প্রচুর
পরিমাণ অ্যালোভেরা পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় বিভিন্ন বাসাবাড়ি ছাদে ও বেলকুনিতে
টোবে করে অ্যালোভেরা গাছ লাগানো লক্ষ্য করা যায়। আপনারা চাইলে অ্যালোভেরা
ব্যবহার করে আপনাদের ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে পারেন। এর জন্য প্রথমে
অ্যালোভেরার ভিতরে যে জেলি রয়েছে সেটি বের করে মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫
মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপরে জেলি শুকিয়ে যাওয়ার পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে
ফেলতে হবে। এভাবে ১ থেকে ২ সপ্তাহ অ্যালোভেরা ব্যবহার করার ফলে ত্বকের ফর্সা ও
সৌন্দর্য ভাব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে টমেটোর ব্যবহার
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় হল টমেটো। ঘরোয়া পদ্ধতিতে টমেটোর ব্যবহার
করে ত্বকের ফর্সা ভাব বৃদ্ধি করা যায়। এর কারণ হলো টমেটোর মধ্যে likopen জাতীয়
এক ধরনের উপাদান থাকে। যার ফলে ত্বকের ভিতর থেকে ফর্সা ভাব বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করে।
এজন্য প্রথম ২ /৩ টা টমেটো ব্যালেন্ডারের রস বানিয়ে ১ থেকে ২ চামচ লেবুর রস
ভালোভাবে মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। এরপরে
পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এভাবে কয়েকদিন টমেটোর
ব্যবহারের ফলে ত্বকের সৌন্দর্য ও ফর্সা ভাব ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে গোলাপ জলের ব্যবহার
গোলাপজল ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায়। ঘরোয়া পদ্ধতিতে গোলাপ জলের ব্যবহার
করার মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা খুবই সহজ। এর কারণ গোলাপজল শরীরের
ত্বকের স্কিন ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনারা চাইলে সহজে ২ চামচ
গোলাপ জলের সাথে ১ চামচ কাঁচা দুধ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপরে ঘুমানোর আগে
পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ৫ মিনিট পরে গোলাপ জলের পেস্ট মুখে লাগিয়ে
ঘুমিয়ে পড়ুন। তারপরে সকালে ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে
মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। এভাবে ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে ত্বকের লাবণ্য ও সৌন্দর্য
বৃদ্ধি পেতে শুরু করবে।
লেখক এর শেষ কথা
প্রিয় পাঠক গন আপনারা ইতিমধ্যে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ফর্সা হওয়ার উপায় সম্পর্কে
ধারণা পেয়ে গেছেন। ঘরোয়া পদ্ধতিতে বিভিন্ন উপাদানের মাধ্যমে ত্বকের সৌন্দর্য
বৃদ্ধি করা যায়। যারা খুব দ্রুত ফর্সা হতে চান আপনারা চাইলে উপরের পদ্ধতি গুলো
ব্যবহার করে ত্বকের সৌন্দর্য বা লাবণ্য বৃদ্ধি করতে পারেন। আশা করি আপনাদের
প্রয়োজন অনুযায়ী পোস্টটি তৈরি করতে পেরেছি। আমাদের পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে
অবশ্যই লাইক কমেন্ট শেয়ার করে দিয়ে সহায়তা করবেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন ধরনের
তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। যারা আমাদের পোস্টটি এত কষ্ট করে
পড়েছেন আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url